নিজস্ব প্রতিনিধি
নাটোরের বেলঘরিয়া মোড় থেকে চন্দন মারিয়া পর্যন্ত সড়কটির দুই পাশে কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসীর দাবি, কাজের শুরু থেকেই ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী, যার ফলে রাস্তার টেকসইতা নিয়ে দেখা দিয়েছে প্রশ্ন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নির্মাণ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে ইট ভাঙ্গা খোয়ার সঙ্গে মিশ্রিত ধুলোবালি ও রাবিস। এতে রাস্তাটি ঠিকভাবে জমাট বাঁধছে না। ইট ও খোয়াও মানসম্পন্ন নয়, সহজেই গুঁড়ো হয়ে যাচ্ছে। এতে করে কয়েক মাসের মধ্যেই রাস্তাটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল খালেক বলেন, “রাস্তা তো বানানো হচ্ছে, কিন্তু যেভাবে নিচে ধুলো আর রাবিস ফেলা হচ্ছে, এতে তো মনে হয় তিন মাসেই আবার গর্ত হয়ে যাবে।”
এলাকার আরেকজন প্রবীণ ব্যক্তি মমিন উদ্দিন বলেন, “সরকার কোটি কোটি টাকা দিচ্ছে উন্নয়নের জন্য, কিন্তু সেই টাকা ঠিকঠাক কাজে লাগছে না। এটা খুবই দুঃখজনক।”
সুশীল সমাজের অনেকে এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, বেলঘরিয়া মোড় থেকে চন্দন মারিয়া পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশের নির্মাণ কাজে যেভাবে নিম্নমানের ইট, খোয়া, ধুলোবালি ও রাবিস ব্যবহার করা হচ্ছে, তা জনগণের অর্থের অপব্যবহার এবং ভবিষ্যতে বড় ধরনের দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি করছে।
স্থানীয় একজন শিক্ষক বলেছেন, “এটা খুবই দুঃখজনক যে জনগণের করের টাকায় নির্মিত রাস্তায় এমন নিম্নমানের কাজ হচ্ছে। কিছুদিন পরেই আবার সংস্কারের নাম করে নতুন করে বাজেট নেয়া হবে।”
একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা মন্তব্য করেন, “এই ধরনের কাজ উন্নয়নের নামে লুটপাট। যথাযথ তদারকি ও জবাবদিহিতার অভাবে ঠিকাদাররা যা ইচ্ছা তা-ই করছে।”
স্থানীয় যুব সমাজের কেউ কেউ আবার সামাজিক মাধ্যমে এসব দুর্নীতির ভিডিও ও ছবি প্রকাশ করে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছে। তবে এখনো দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়নি।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নাটোর জেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ইকবাল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে এবং প্রয়োজনে নির্মাণ কাজের গুণগত মান পরীক্ষা করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, এ সড়কটি স্থানীয় জনগণের যাতায়াতের অন্যতম প্রধান মাধ্যম। প্রতিদিন হাজারো মানুষ এই রাস্তায় চলাচল করেন। এমন অনিয়মের কারণে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।