সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ০৫:৩৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
যশোরের বেনাপোল রেল স্টেশন পরিদর্শন করেন রেলওয়ের মহাপরিচালক মোঃ আফজাল হোসেন ভারত যাওয়ার সময় রংপুরের আঃলীগ নেতা আনিছুর রহমান গ্রেফতার  কুমিল্লার হোমনায় বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ দুই মাদক আটক যশোর চৌগাছায় গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু কুমিল্লায় দুই মাদক ব‍্যবসায়ীকে আটক করেছে র‍্যাব-১১,সিপিসি-২  জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে উপজেলা দিবস ও উন্নয়ন মেলা অনুষ্ঠিত  কুমিল্লা-২ আসনের সম্ভাব‍্য সংসদ সদস‍্য পদপ্রার্থী আবু বকর সিদ্দিক লিটু রিভায়রা গ্রুপের পরিচালকের বিরুদ্ধে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ কুষ্টিয়ায় শীর্ষ সন্ত্রাসী লিপ্টনকে বাঁচাতে তৎপর উপসচিব ভাই আলমগীর কবির সাভারে আগুনে দগ্ধ অসহায় মায়ার চিকিৎসায় বিএনপি নেতা -খোরশেদ আলম

তহশিলদার শফিকুলের ঘুষ বাণিজ্যে অতিষ্ঠ ভুক্তভোগীরা

সংবাদ দাতার নাম
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ৩১ মে, ২০২৫
  • ১৬২ বার পড়া হয়েছে

 

রতন কুমার ঘোষ ভেড়ামারা থানা প্রতিনিধি

 

 

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় মোকাররমপুর ইউনিয়নের তহশিলদার শফিকুল ইসলাম শফির ঘুষ বাণিজ্যে অতিষ্ঠ সেবা নিতে আসা ভুক্তভোগীরা। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ অসুস্থতার দোহাই দিয়ে নিয়মিত অফিসও করেন না তিনি।

সরেজমিনে গিয়ে তাকে অধিকাংশ দিনই পাওয়া যায়নি। তার সহকারী তহশিলদার নাজমুল দাবি করে বলেন, অসুস্থ থাকায় হয়তো আসেননি।
এছাড়াও বিভিন্ন স্থান থেকে আশা ভুক্তভোগীরা সেবা না দিয়েও এ সময় তাদেরকে চলে যেতে দেখা গেছে। আবার কোন কোন ভুক্তভোগী অভিযোগ করেছেন, বেশ কিছুদিন ধরেই জমির খারিজ, খাজনা দেওয়ার জন্য তারাও এই অফিসে ঘোরাঘুরি করছেন। ইচ্ছাকৃতভাবেই তিনি গ্রাহকদের হয়রানি করছেন। বিভিন্ন মাধ্যমে দাবি করছেন মোটা অংকের টাকা।
ভুক্তভোগীদের দাবি, তিনি রয়েল এনফিল্ড সহ বিভিন্ন নামিদামি ব্যান্ডের গাড়িতে চড়ে অফিসে আসেন।

ভুক্তভোগী সোহেলের দাবি, “বিগত ৬ মাসে অন্তত ২৫ বার তিনি মোকাররমপুর ভূমি অফিসে গিয়েছেন জমির খাজনা দিতে। কিন্তু তহশিলদার শফিকুল ইসলাম তাকে কোন সাহায্যই করেনি। উল্টো সহকারির মাধ্যমে ২ হাজার টাকার খাজনার বিপরীতে চেয়েছেন ৭০ হাজার টাকা।” “১৫ মে বৃহস্পতিবার দলিল লেখক ইয়ারুলের মাধ্যমে ৪০ হাজার টাকা শফিকুলকে দেওয়া হয়।কাজের মাঝপথে বিদ্যুৎ চলে গেলে শফিকুল খাজনার কাগজ শনিবারে দিতে চায়। কিন্তু সোহেল মাহমুদ তাতে রাজি না হয়ে তহশিলদারের থেকে টাকা ফেরত নেন।
এদিকে জমির খাজনা দিতে না পারায়, পারছেননা জমি বিক্রি করতে। টাকার অভাবে তাই মেয়ের বিয়েও আটকে আছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবারটি।
পরিবারটি আরও দাবি করেছেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভূমি কর্মকর্তার কাছে গিয়েও কোন সূরাহা হয়নি। তাই অনেকটা বাধ্য হয়েই দলিল লেখক ইয়ারুলের মাধ্যমে ৪০ হাজার টাকায় সমঝোতা চেষ্টা করেছেন।

ভেড়ামারা পৌরসভার কলেজপাড়ার বাসিন্দা ভুক্তভোগী সোহেল মাহমুদ জানান, তিনি তার ৪২ শতক জমির খাজনা দেওয়ার জন্য প্রায় ৬ মাস ধরে মোকাররমপুর ভূমি অফিসে ২৫ বার গিয়েছেন। সেখানকার দায়িত্বপ্রাপ্ত তহশিলদার শফিকুল ইসলামকে খাজনার কথা বললেই তিনি পাশের সিটের কম্পিউটার চালককে দেখিয়ে দেন। কম্পিউটার চালক খাজনা দেওয়ার জন্য ৭০ হাজার টাকার কথা বলেন। এসময় শফিকুল বলেন, বর্তমানে খাজনা দিতে হলে সমস্ত জমির খাজনা এভাবেই দিতে হয়। এক্ষেত্রে আপনি ভূমি কমিশনারের থেকে চিরকুট নিয়ে আসলে আমি আপনার খাজনা দিতে পারি।

 

সোহেল আরও বলেন, আমি ও আমার ভাই সাব্বির, আমাদের মোকাররমপুর ইউনিয়নের গোলাপনগর মোজার জেএল -৯ এবং আরএস ৬৮ খতিয়ানের, ৪৯২৮ ও ৪৯৩০ দাগের জমির খাজনা বাংলা ১৪২৮ সাল পর্যন্ত ২৪৪ ও ১৫৮ টাকা বাৎসরিক হারে পরিশোধ করেছি । তার খাজনা বাকি রয়েছে মাত্র ৩-৪ বছরের। তাছাড়াও তার বাবার ১ একর ৪২ শতক জমির অধিকাংশ জমির খাজনা তার ভাইয়েরা পরিশোধ করেছে। মূলত মেয়ের বিয়ের জন্য আমার অংশের ৪২ শতক জমি বিক্রয়ের জন্য বায়না করেছি। খাজনা হয়ে গেলেই রেজিস্ট্রি হবে। তহশিলদার শফিকুল এরই সুযোগ নিচ্ছেন।
সোহেল অভিযোগ করে বলেন, আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা ভূমি কর্মকর্তার কাছেও গিয়েছে। কিন্তু তারা আমাকে কোন রকম সাহায্য করেননি। এছাড়াও আমি দুদকসহ আরও কিছু প্রতিষ্ঠানের দ্বারে দ্বারে অসহায়ের মত ঘুরেছি কোন লাভ হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক ইয়ারুলের মাধ্যমে গত ৮মে বৃহস্পতিবার ৪০ হাজার টাকায় রফাদফা করেছি।পরবর্তীতে ১৫ই মে বৃহস্পতিবার ইয়ারুল খাজনা দেওয়ার জন্য মোকাররমপুর ভূমি অফিসে আমাকে দুবার ডাকে। দু’ঘণ্টা বসিয়ে রাখার পর বিকেল ৫টার সময় ইয়ারুল ৪০ হাজার টাকা আমার থেকে নিয়ে তহশিলদার শফিকুলকে দেয়। কাজ করার মাঝপথে বিদ্যুৎ চলে গেলে শফিকুল শনিবারে খাজনার রশিদ দিতে চায়। তার প্রতি বিশ্বাস না থাকাই শফিকুলের থেকে আমি ৪০ হাজার টাকা ফিরিয়ে নেই।

সোহেল মাহমুদের স্ত্রী আলীয়া খাতুন জানান, আমরা কোথাও থেকে কোন সাহায্য পাইনি। জমির খাজনা দিতে না পারায় বিক্রি করতে পারছি না। এইজন্যই আমার মেয়ের বিয়ে আটকে আছে। আজ টাকা হাতে পেলেই কাল বিয়ে হবে।খুব দুর্দশার মধ্যে আছি।

দলিল লেখক ইয়ারুল ৪০ হাজার টাকা তহশিলদার শফিকুলকে দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ১৫ই মে আমার মাধ্যমেই সোহেল মাহমুদ শফিকুলকে চল্লিশ হাজার টাকা দিয়েছিল। বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় তহশিলদার শনিবার খাজনার রশিদ দিতে চায়। সোহেল মাহমুদ রাজি না হয় টাকা ফেরত নেয়।

খাজনা দিতে কত টাকা লাগবে এমন প্রশ্নে ইয়ারুল বলেন, ৪০ হাজার টাকার কম লাগবে। কিন্তু কাজ করতে হলে তহশিলদারকে এটাই দিতে হবে।

মোকাররমপুর ভূমি অফিসের তহশিলদার শফিকুল ইসলামের সাথে ২৯মে(বৃহস্পতিবার) যোগাযোগ করা হলে,তিনি বলেন, সোহেল মাহমুদ নামে আমি কাউকে চিনিনা। পরবর্তীতে দলিল লেখক ইয়ারুলের মাধ্যমে ৪০ হাজার টাকা নেওয়ার কথা বললে, তিনি বলেন,” এবার চিনতে পেরেছি”। আমার টেবিলের উপরে রেখেছিল তবে সেই টাকা আমি নেই নাই। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন সেবা গ্রহীতার ভোগান্তির বিষয়টা পুরোপুরি অস্বীকার করেন। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোটরবাইক চালানোর বিষয়ে তিনি বলেন, “ওগুলো আমার গাড়ি নয়, জামাইয়ের গাড়ি। শখ করে চড়েছি”।

ভেড়ামারা সহকারী (ভূমি) কমিশনার আনোয়ার হোসাইনকে তহশিলদার শফিকুলের ৪০ হাজার টাকায় খাজনা দেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, আমার জানামতে খাজনা দিতে কখনোই এত টাকা লাগেনা। পূর্ববর্তী খাজনা রশিদ দেখে তিনি বলেন, বাৎসরিক হিসেবে ২৪৪ টাকা লাগবে। তাছাড়া এই জমির খাজনা আরএস রেকর্ড অনুযায়ী দেয়া যাবে। বাংলা ১৪২০ সাল, বিডিএস অনুযায়ীও যদি খাজনা দিতে হয়, তাও এত টাকা লাগবে না। ভুক্তভোগী অভিযোগ করলে, অবশ্যই আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।

এ বিভাগের আরো সংবাদ

আজকের নামাজের সময়সুচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৩:৪৬ পূর্বাহ্ণ
  • ১২:০৩ অপরাহ্ণ
  • ১৬:৪০ অপরাহ্ণ
  • ১৮:৫২ অপরাহ্ণ
  • ২০:১৮ অপরাহ্ণ
  • ৫:১১ পূর্বাহ্ণ
স্বত্ব © ২০২৫ দৈনিক সত্য প্রকাশ
Design by: POPULAR HOST BD
themesba-lates1749691102