কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি,মো:হানিফ মিয়া
কুমিল্লার তিতাস উপজেলার ৮ নং জিয়ারকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির নব-নির্বাচিত সভাপতি মকবুল হোসেন সরকার দলের দুর্দিনের এক পরীক্ষিত সৈনিক বলে জানা তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
তাঁকে জিয়ারকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত করায়,তিনি বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ও সাবেক সফল মন্ত্রী, বীর মুক্তিযোদ্ধা জননেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন স্যার ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মারুফ হোসেন এর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।পাশাপাশি তিতাস উপজেলা বিএনপির নব-নির্বাচিত সভাপতি ওসমান গনি ভূইয়া ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান সেলিম ভূইয়ার প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তিনি।
জানা যায়, কুমিল্লা-১(বৃহত্তর দাউদকান্দি) আসনে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক সফল মন্ত্রী, বীর মুক্তিযোদ্ধা জননেতা ড.মোশাররফ হোসেন স্যারের প্রথম নির্বাচনী প্রচার- প্রচারণায় অংশ গ্রহণ করার মধ্যে দিয়েই বিএনপির রাজনীতিতে প্রবেশ করেন জিয়ারকান্দি গ্রামের কৃতিসন্তান মকবুল হোসেন সরকার।তখন দলীয় কোন পদবী ছিলো না তাঁর।
এরপর ১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-১(বৃহত্তর দাউদকান্দি)আসনে বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য পদ-প্রার্থী জননেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন স্যারের (ধানের শীষ)মার্কাকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে নির্বাচনী- প্রচারণায় অংশ গ্রহণ করে মাঠে কাজ করেছেন নিরলস ভাবে তিনি। ওই নির্বাচনে বিএনপি সরকার গঠন করে।
ওই নির্বাচনে জনগনের বিপুল ভোটে কুমিল্লা-১(বৃহত্তর দাউদকান্দি)আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হোন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য জননেতা ড. খন্দকার মোশাররফ স্যার।বিএনপি সরকার গঠন করলে বিদ্যুৎ জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রীর দায়িত্ব পান বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য জননেতা ড.খন্দকার মোশাররফ স্যার।
তখন দাউদকান্দি উপজেলা বিএনপির শিশু বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন মকবুল হোসেন সরকার। বৃহত্তর দাউদকান্দি উপজেলার উত্তর অঞ্চলের জণগণের প্রাণের দাবীতে তিতাস উপজেলা প্রতিষ্ঠা করেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ও সাবেক সফল মন্ত্রী, বীর মুক্তিযোদ্ধা জননেতা ড.খন্দকার মোশাররফ হোসেন স্যার।বৃহত্তর দাউদকান্দি উপজেলা থেকে আলাদা হয়ে দীর্ঘ ১৫ বছর পর তিতাস উপজেলা সৃষ্টি হলে তিতাস উপজেলা বিএনপির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়।
আর সেই কাউন্সিলে মাছ মার্কা প্রতীক নিয়ে তিতাস উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পদে প্রার্থী হোন মকবুল হোসেন সরকার। এরপর দলীয় নেতৃবৃন্দরা তাঁকে উপজেলা বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক পদে দায়িত্ব দেন। এরপর তিনি জিয়ারকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির কাউন্সিলে মাছ মার্কা প্রতীক নিয়ে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন করলে দলীয় নেতৃবৃন্দরা তাঁকে জিয়ারকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করেন।
দলের জন্য নিরলস ভাবে মাঠে কাজ করায়,তিতাস উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য নির্বাচিত হোন মকবুল হোসেন সরকার। দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর বাজারে মা কনফেকশনারি নামে একটি পাইকারী দোকান ছিলো মকবুল হোসেন সরকারের।কিন্তু বিএনপির রাজনীতি করার কারণে স্থানীয় আ.লীগের ক্যাডার বাহিনীর সদস্যরা তাঁকে হত্যার হুমকি দিয়ে তাঁর ছোট ভাই দোকান পরিচালক রজ্জব আলীকে অন্য একটি মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে তাঁকে জেল হাজতে প্রেরণ করে দেয় পুলিশ।এবং এর এক মাস পর তার ছোট ভাই রজ্জব আলীকে আটক করে তাঁকে ডাকাতি ও মার্ডারসহ গৌরীপুরের বিল্লাল
হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরণ করে পুলিশ।মিথ্যা মামলার কারণে মকবুল হোসেন সরকার ও রজ্জব আলী নিয়মিত দোকানটিতে বসতে না পারায় তখন দোকান দখল করে নেয় স্থানীয় আ.লীগের ক্যাডার বাহিনী।
এরপর ২০১৭ সালে ৬০ লক্ষ টাকা ব্যয় করে
গৌরীপুর বাজার পুলিশ ফারির গেট সংলগ্ন লতিফ মার্কেটে একটি দোকান ছিলো মকবুল হোসেন সরকারের। তার অপরাধ তিনি বিএনপির রাজনীতি করেন, সে কারণে প্রকাশ্যে সকাল দশটা থেকে বিকেলে ৪ টা পর্যন্ত গৌরীপুর এ এস পি সার্কেল মহিতুলনের নেতৃত্ব আ.লীগের ক্যাডার বাহিনীসহ তাদের লালিত পালিত পুলিশ বাহিনী জোর পূর্বক গৌরীপুরের তামিম ষ্টীল মার্টের সব মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
এই ঘটনার ক্ষতিপূরণের জন্য তিনি মামলা করার চেষ্টা করলে উল্টো তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে কারাগারে প্রেরন করেন পুলিশ। তখন তিনি দোকান লুটের ঘটনাটি বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ও সাবেক সফল মন্ত্রী, বীর মুক্তিযোদ্ধা জননেতা ড.মোশাররফ হোসেন স্যারকে অবগত করলে তিনি মকবুল হোসেন সরকারকে সান্ত্বনা দিয়ে ধৈর্য ধরতে বলেন এবং দল ক্ষমতায় আসলে তিনি এবিষয়টি দেখবেন বলে তাঁকে আশ্বাস দেন।
তিনি দীর্ঘ সময় ধরে বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় থেকে দলের ডাকা আ.লীগের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে মাঠে সক্রিয় ভূমিকা রাখায় তাঁর প্রতি ক্ষীপ্ত হয়ে তাঁকে চিরতরে নিঃশেষ করার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে ৭০-৮০ টি ষড়যন্ত্র মূলক মিথ্যা ও বানোয়াট রাজনৈতিক হয়রানি মূলক মামলা ঠুকে দেয় স্বৈরাচার আ.লীগের দোসররা।এর মধ্যে ষড়যন্ত্র মূলক ভাবে ১০ টি হত্যা মামলায় তাঁকে আসামি করা হয়। তারপরও বিএনপির রাজনীতি থেকে তাঁকে একবিন্দু পরিমাণও নাড়াতে পারেননি স্বৈরাচার আ.লীগের দোসররা।এখানেই শেষ নয়, তাঁকে এতো গুলো মামলার আসামি করেও তাঁকে থামাতে না পারায়, তাঁর বাড়ির সামনে তাঁর আপন ছোট ভাই এমদাদুল হক সরকারকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে ফেলে যায় আ.লীগের ক্যাডার বাহিনী।
এরপর চিকিৎসাধীন অবস্থায় এমদাদুল হক সরকার মারা যান।এরপর মকবুল হোসেন সরকারকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর মাথায় ১০ টি কুপ মারে আ.লীগের দোসররা।তখন তিনি গুরুতর আহত হয়ে দীর্ঘদিন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে তিনি পুনরায় আবার দলীয় কর্মকান্ডে সক্রিয় হোন।
আ.লীগের শাসনামলে পুলিশি বাঁধার কারণে তিতাস উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন মিটিং ও সভা- সমাবেশ মকবুল হোসেন সরকারের জিয়ারকান্দি বাসভবনে অনুষ্ঠিত হতো, আর সেই ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে আ.লীগের লেলিয়ে দেয়া র্যাব-পুলিশ তাঁকে একাধিক বার আটক করে নিয়ে যায় এবং তাঁকে একাধিকবার ক্রস ফায়ারের মাধ্যমে হত্যার চেষ্টা করে স্বৈরাচার আ.লীগের দোসররা।তারপরও তিনি নিজের জীবন বাজী রেখে দলের জন্য মাঠে কাজ করেছেন এবং এখনো করছেন তিনি।
গেলো ২০২৪ সালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের এক দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ওই বছরের ১৯ জুলাই ঢাকার রামপুরা টেলিভিশন সেন্টার ও বনশ্রী সড়কের মধ্যে স্থানে আন্দোলনরত অবস্থায় বিজিবি চাইনিজ রাইফেলের গুলিতে নিহত হয় মকবুল হোসেন সরকারের মেয়ের জামাই রাসেল মিয়া।বিজিবির গুলিতে তাঁর বুক ঝাঁঝরা হয়ে গেলে রাসেল মিয়া ঘটনাস্থলেয়ই মৃত্যু বরণ করেন।
এই ঘটনায় স্বামী হত্যা বিচার চেয়ে ২৮ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ২০০জনকে অজ্ঞাত আসামি করে আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহত রাসেল মিয়ার স্ত্রী মোসামৎ শারমিন আক্তার। এছাড়া মকবুল হোসেন সরকারের ছেলে শামীম সরকার বর্তমানে তিতাস উপজেলা ছাত্র দলের যুগ্ম-আহবায়ক পদে দায়িত্ব পালন করছেন।
এক কথায় বলা যায়, মকবুল হোসেন সরকারের পুরো পরিবারই বিএনপির রাজনীতিতে বিশ্বাসী।তাঁকে জিয়ারকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি পদে নির্বাচিত করায়, তিনি মহান আল্লাহ তাআলা রাব্বুল আলামিনের নিকট লাখ কুটি শুকরিয়া জ্ঞাপন করেছেন। তার সাথে দেখা হলে তিনি একান্ত সাক্ষাৎ এ উপরোক্ত কথা গুলো বলেছেন।