শাহীদুল ইসলাম কালু,শেরপুর জেলা প্রতিনিধি:
৭ ডিসেম্বর শেরপুর মুক্ত দিবস উপলক্ষে আনন্দ র্যালি, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে শেরপুর শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে একটি র্যালি বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শেরপুর শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে গিয়ে শেষ হয়।
সেখানে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ শেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শেরপুরের জেলা প্রশাসক আব্দুল্লাহ আল-খায়রুম। ওইসময় তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে অনেক ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের বিজয় ও স্বাধীনতা। আজকে সেই চেতনাকে ধারণ করে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি শেরপুর মুক্ত দিবসের প্রেক্ষাপটসহ মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে নতুন প্রজন্মের প্রতি আহবান জানান।
পদোন্নপতিপ্রাপ্ত উপ-সচিব অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুকতাদিরুল আহমেদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম, জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার নুরুল ইসলাম হিরো, সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার এ্যাডভোকেট মোখলেছুর রহমান আকন্দ, প্রেসক্লাব সভাপতি রফিকুল ইসলাম আধার ও শহীদ পরিবারের সন্তান শিব শঙ্কর কারুয়া শিবু। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন করুণা দাস কারুয়া।
ওইসময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক তোফায়েল আহমেদ, নবাগত সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজাবে রহমত ও সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোবারক হোসেন। আলোচনা সভা শেষে স্থানীয় শিল্পীদের অংশগ্রহণে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সহায়তায় শেরপুর অঞ্চলকে শত্রু মুক্ত করেন বাংলার সূর্যসন্তান মুক্তিযোদ্ধারা। এদিন ভারতীয় সেনা বাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডার ও মিত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক লে. জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা হেলিকপ্টারে শেরপুর শহীদ দারোগ আলী পৌরপার্ক মাঠে অবতরণ করেন। এ সময় শেরপুরের মুক্তিকামী ছাত্রজনতা জেনারেল অরোরাকে এক সংবর্ধনা দেন। তিনি সংবর্ধনা সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে শেরপুরকে হানাদারমুক্ত বলে ঘোষণা দেন। ওইসময় মুক্ত শেরপুরে প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। ওইসময় হাজারও জনতার উদ্দেশ্যে জেনারেল অরোরা বলেন, ‘আপনাদের দেশ স্বাধীন হওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। আমরা আপনাদেরকে সহযোগিতা করছি, দেশ রক্ষা করার দায়িত্ব আপনাদের। জয়বাংলা।