মো: লিটন উজ্জামান বিশেষ প্রতিনিধি
আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ খেলাধুলা
উন্নত প্রযুক্তি আর আধুনিকতার ছোঁয়া লেগে হারিয়ে যেতে বসেছে আদি গ্রামীণ সাধারণ মানুষের খেলাধুলা। এক সময় গ্রামগঞ্জের ছেলে মেয়েরা পড়ালেখার পাশাপাশি বিভিন্ন খেলাধুলায় অভ্যস্ত ছিল। তারা অবসর সময় ছেলে-মেয়েরা দলবেঁধে খেলতে যেত গ্রামের খোলা মাঠে,বাড়ির উঠানে। পুকুর ঝাপ দিয়ে গোসল করা সহ শৈশবে দুরন্তপনায় জড়িয়ে থাকতো বিভিন্ন খেলাধুলার মাধ্যমে।
কিন্তু আধুনিক সভ্যতার ছোঁয়া অ্যান্ড্রয়েড ,মোবাইল গেমস ও কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে এ সব জনপ্রিয় গ্রামীণ খেলাধুলা। পাড়া মহল্লাতে তেমন একটা চোখে পড়ে না শিশু-কিশোরদের এক সময়ের জনপ্রিয় মজার খেলাধুলা। কানামাছি বৌ বৌ, হাঁ-ডু-ডু, লাটিম খেলা, পাক্ষি খেলা, দাড়িয়া বান্ধা,গোল্লাছুট, ঢাংগুলি ( টেমঢাং) মারবেল, হাঁসধরা, রশিটানা, ইচিং-বিচিং, ওপেন টু বায়োস্কোপ, মল্ল যুদ্ধ, লাঠিখেলা, লুকোচুরি, কক ফাইট (মোরগ লড়াই), কড়ি, ধাপ্পা, কুতকুত, বিস্কুট খেলা, যেমন খুশি তেমন সাঁজ, পুতুলের বিয়ে, চড়ই -ভাতি, এলাডিং বেলাডিং, সাত চাড়া উল্লেখযোগ্য খেলা । একসময় দুপুর ঘনিয়ে যখন বিকেল হতো একটু ফাঁকা জায়গা পেলেই বিশেষ করে বাড়ির উঠানে কানামাছি , হা-ডু-ডু, গোল্লাছোট, দাড়িয়াবান্ধা কিংবা ঢাংগুলি খেলায় মেতে উঠত। সন্ধ্যা হলে খেলা ধূলায় মত্ত শিশু কিশোর নিজ নিজ বাসায় চলে যেত হারিকেন বা মোমবাতির আলোতে পড়তে বসতো। সেই সময় ক্রিকেট তো দূরের কথা একক ভাবে ফুটবল কেনা ছিল বিশাল ব্যাপার। দুই দলের খেলোয়ারা চাঁদা তুলে প্রথম পুরস্কার একটা বাড়ির গ্লাসন এবং দ্বিতীয় পুরস্কার একটা কলম দিয়ে দুই দলের মধ্যে জমজমাট ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত হতো। ছোট বয়সের চাচাতো ফুফাত,মামাতো ভাইবোন, বন্ধু-বান্ধব, মিলে পড়ন্ত বিকালে ও জ্যোৎস্না রাতে গোল্লাছুট, হাঁ-ডু-ডু ও দাঁড়িয়াবান্ধা খেলাগুলো মনের গহিনে এখনো নাড়া দেয়।