নিজস্ব প্রতিবেদক মোঃ আরমান হোসেন
স্বামীর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার স্ত্রী সহ্য করতে না পেরে গলায় ওড়না পেচিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে স্ত্রী।
এমন এক নেক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের নিশ্চিন্তপুর এলাকার নাজিমুদ্দিনের বাসায়।
গত ১২ (জুন) আনুমানিক রাত ১ টার পর মৌচাক ৬ নং ওয়ার্ডের নিশ্চিন্তপুর এলাকায় নাজিমুদ্দিনের বাসায় শরিফুলের স্ত্রী হাসি খাতুন (১৯) গলায় ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে জানায় হাসির স্বামী শরিফুল ।
এলাকা বাসি সূত্রে জানা যায়, শরিফুল, হাসি, দম্পতি দীর্ঘ ১ বছর যাবৎ নাজিমুদ্দিনের বাসায় ভারা থাকত হাসি খুব ভালো ও ঠান্ডা মেজাজের মেয়ে ছিলো। হাসি বিয়ে হওয়ার পর থেকেই গার্মেন্টসে চাকরি করাতো তার স্বামী শরিফুল। প্রতি মাসে বেতনের টাকা তুলে দিতে হতো শরিফুলের হাতে, টাকা না দিলেই বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো স্বামী শরিফুল। হাসির মা বেঁচে নেই, বাবা থেকেও নেই, ছোটবেলা থেকে তাকে মানুষ করেছে তার খালু বাবু মিয়া, হাসি তার খালু বাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলে শরিফুল নিষেধ করতো । গত দুইদিন আগে থেকে শরিফুলের সঙ্গে হাসির ঝগড়া হচ্ছিল এবং গতকাল রাতে হাসিকে মেরে অফিসে চলে যায় শরিফুল। এবং এ বিষয়টি সহ্য করতে না পেরে হাসি ঘরের দরজা বন্ধ করে গলায় ওড়না পেচিয়ে ঘরের তীরের সঙ্গে ওড়না বেঁধে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করে।
এ বিষয়ে শরিফুলের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, আমার স্ত্রী হাসি তার মামা বিদেশে যাবে বলে আমাকে বলেছিল ২০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা, আমি বলেছি ঠিক আছে টাকা দেব কিন্তু যেদিন মামার ফ্লাইট হবে তার আগের দিন। আমাদের ঝগড়ার ইস্যুটা শুধু এটাই ছিল সে টাকা চাইছে এখনি আমি দিতে চাই নাই।
হাসির খালু বাবু মিয়ার সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, আমার ভাগ্নি হাসি যদি গলায় ফাঁস নিয়ে মারা যেত তাহলে জিহ্বা বড় হয়ে যেত, প্রসাব পায়খানা করে কাপড় নষ্ট করত, কিন্তু কিছুই সে করে নাই, এরকম কোন আলামত আমরা দেখি নাই। আমার মনে হচ্ছে হাসিকে শরিফুল হত্যা করেছে এবং পরবর্তীতে গলায় দড়ি পেঁচিয়ে তাকে ঝুলিয়ে রেখেছে। আমি প্রশাসনের কাছে এর সুস্ঠ তদন্ত করে বিচার চাই।
পরে ৯৯৯ ফোন দিলে কালিয়াকৈর থানার মৌচাক ফাঁড়ি থেকে পুলিশ এসে হাসি কে ঘরের মেঝেতে সোয়ানো অবস্থায় পায় তদন্ত করতে আসা এস আই আসাদ ঘাতক স্বামী শরিফুলকে সহ লাশ নিয়ে যায় মৌচাক ফাঁড়িতে। সেখান থেকে ঘাতক স্বামী শরিফুল কে ছেড়ে দিয়ে হাসির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
এ বিষয়ে কালিয়াকৈর থানার অফিসার ইনচার্জ এ এস এম নাসিম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন পোসমাডাম রিপোর্ট আসলে তদন্ত করে আই নানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।