নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজশাহীর পুঁঠিয়া উপজেলায় রাতের আঁধারে তিন ফসলি জমিতে পুকুর খননের চলছে মহোৎসব । দেখার মতো যেন কেউ নেই, উপজেলা প্রশাসনকে চোঁখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়ার পরেও চলে ভেকু দিয়ে পুকুর খনন। সম্প্রতি আরো বেড়ে গিয়েছে পুঠিয়া উপজেলায় কৃষি জমিতে পুকুর খনন। মাঝে মাঝে নাম সর্বস্ব অভিযান চালিয়ে পুকুর খনন সাময়িক বন্ধ হলেও অদৃশ্য কারনে ঠিক পরের দিনই আবার চালু হয়ে যায় পুকুর খনন ও মাটি বিক্রির বাণিজ্য।
২৬ জুন পুঠিয়া উপজেলার পালোপাড়া ২নং ওয়ার্ডের তাহেরের মোড়ে বাগমারা বিলে ভেকু নামিয়ে ফসলি জমিতে পুকুর খননের প্রস্তুতি কালে পুকুর খননের কোন অনুমতি আছে কিনা জানতে চাইলে জাতীয় পত্রিকা দৈনিক স্বাধীন বাংলার স্টাফ রিপোর্টার হাসমত কে পুকুর খননের মূল হোতা দুর্লভপুর গ্রামের মজিবর কালু রেগে গিয়ে সাংবাদিক হাসমত কে অকাট্য ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি প্রদান করে এবং বলে রাজশাহী থেকে বড় বড় সাংবাদিক এসে আমার কিছুই করতে পারে নাই। তুমি কোথাকার কে তোমাকে বলতে হবে অনুমতি আছে কিনা। এ বিষয়ে পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ কে এম নূর হোসেন নির্ঝর এর কাছে মুঠো ফোনে পুকুর খননের বিষয় জানালে তিনি বলেন, ফসলি জমিতে পুকুর খনন করার কোন অনুমতি দিইনি আমি। যদি কেউ ফসলে জমিতে পুকুর খনন করে থাকে আমি অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আপনি আমাকে একটা মেসেজ দিন ঘটনাটা কোথায়। তিনি আরো বলেন গত দুইদিন আগেও এ বিষয়ে শিলমাড়িয়া ইউনিয়নে আমরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছি। এ বিষয়ে আমি পরবর্তীতে (ইউএনও) কে মেসেজ পাঠিয়ে কনো লাভ হয়নি এই মাটি খেকো সিন্ডিকেটের হাত এতটাই লম্বা যে সেই রাতেই তারা পুকুর খনন করে। এদিকে মোহনপুর বিলে কাদের মিয়া ধানের জমিতে পুকুর খনন করে রাতের অন্ধকারে এ বিষয়ে কাদের মিয়া কে মুঠোফোনে অনুমতি আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন অনুমতি নেই তবে আমি শুধু পুকুরের পাড় বাঁধছি আমি কোন মাটি বিক্রি করছি না। তার কিছুক্ষণ পরেই সুইট নামের একজন ফোন দিয়ে সাংবাদিক হাসমত কে অকাট্ট ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি প্রদান করে। শিলমাড়িয়া ইউনিয়নে কাজুপড়া নেংটিপাড়া বিলে গভীর রাতে তিনটি ভেকু নামিয়ে ধানি জমিতে পুকুর খনন করছে যশো পাড়া গ্রামের ৫নং ওয়ার্ড নাম্বার ফারুক ও তার বড় ছেলে ফয়সাল রহমান জন। সেই খননকৃত মাটি গুলো বহনকারী ট্রাকটারে করে বাসু পাড়া কার্তিক পাড়া সহ বিভিন্ন জায়গায় সরকারি রাস্তা নষ্ট করে বিক্রি করা হচ্ছে ইটভাটায়। বাসুপারা বাজারে চোখে পড়ে পুঠিয়া থানা পুলিশের ডিউটিরত অবস্থায় তাদের চোখের সামনে দিয়ে রাস্তা নষ্ট করে সেই মাটিগুলো নিয়ে যাওয়া হচ্ছে পুলিশকে জানালে পুলিশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওপর দায় ভার দিয়ে এড়িয়ে যান।
আদালতের আদেশ কে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে ধোপা পাড়ার কাদের মিয়া, শিলমারিয়া ইউনিয়নের যশো পাড়া গ্রামের মেম্বার ফারুক ও দুর্লভপুরের মজিবর কালু সহ কিছু ক্ষমতাশালী ব্যক্তি এই পুকুর খননের মূল হোতা বলে জানায় স্থানীয়রা।
পুঠিয়ায় মোট কৃষিজমি ৯ হাজার ৬২৯ হেক্টর। আর ১ হাজার ৮৩০ হেক্টর জমিতে ৭ হাজার ৭৭১টি পুকুর আছে আনুমানিক। পুকুরগুলোর অধিকাংশই গত কয়েক বছরে খনন করা হয়েছে। এসব পুকুর খনন করতে কৃষি বিভাগ থেকে অনুমতি নেওয়া হয়নি। যদিও কৃষিজমি সুরক্ষা আইন-২০১৬ (খসড়া)-এর ৪(১) ধারায় বলা হয়েছে, কোনোভাবেই কৃষিজমির ব্যবহারভিত্তিক শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না। সরকারের সুনির্দিষ্ট নীতিমালায় তিন ফসলি জমিতে পুকুর খননের ওপর বিধিনিষেধ থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে কেউ কৃষি জমিতে পুকুর খনন করলে তাদের বিরুদ্ধে মহামান্য হাইকোর্টে অবমাননার মামলা করা যাবে।
পুকুর খনন স্থানে গেলে স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, একদিকে পুকুর খননের মাটি বহনকারী গাড়ি রাস্তা নষ্ট করছে। একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তা তো নয় যেন মরণফাঁদে পরিণত হয় এর থেকে নিস্তার পাবো কিভাবে আমরা সাধারণ মানুষ। আগে মানুষের ধান কেটে জীবিকা নির্বাহ করতাম পাট কেটে জীবিকা নির্বাহ করতাম কিন্তু এখন এই পুকুর খনন হওয়াতে মুষ্টিমে কিছু ক্ষমতাশালী ব্যক্তি লাভবান হলেও আমরা সাধারণ মানুষ হারাচ্ছি কর্ম।
অপরদিকে পাশের আবাদি জমি’র ফসল নষ্ট করছে। ইউএনও, এসিল্যান্ড, থানার ওসিকে ম্যানেজ করে সারারাত পুকুর খননের কাজ চলমান রাখা হয়েছে বলেও স্থানীয়দের অভিযোগ। এ বিষয়ে পুঠিয়া থানার ওসি মো: সাইদুর রহমান কে মুঠো ফোনে জানালে তিনি বলেন পুকুর খনন বিষয়ে আপনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলুন তিনি অনুমতি দিলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।