মোহাম্মদ রাজিবুল ইসলাম মাগুরা
মাগুরায় বিলুপ্ত পুরাতন দিনের ঐতিহ্যবাহী হারিকেন।বিংশ শতাব্দীর দিকে আমাদের জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে গ্রামের প্রতিটি ঘরে ঘরে হারিকেনের মিশেছিল।আধুনিক যুগে হারিয়ে গেছে হারিকেনসহ অনেক পুরাতন ঐতিহ্য।প্রযুক্তি আধুনিকতা আর উন্নত জীবন যাপনের ফলে মানুষের মাঝে চলে এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন।পল্লী বিদ্যুৎ আয়নের যুগে এখন আর দেখা মেলে না হারিকেন ব্যবহারের সেই দৃশ্য।গ্রাম বাংলার প্রতিটি ঘরে অতি প্রয়োজনীয় হারিকেন এখন বিলুপ্তির পথে।যন্ত্রশভ্যতার এযুগে কাঁধে বল্লম আর হাতে হারিকেন নিয়ে ছুটে চলে না রানার।প্রযুক্তির যুগে হারিকেন হারিয়ে গেলেও তার জীবন্ত সাক্ষী ডাক বিভাগের রানার ও গ্রামীণ জনপদের সাধারণ মানুষ।
মাগুরা সদর,শ্রীপুর,শালিখা মহম্মদপুর গ্রাম বাংলার আপমর লোকেদের কাছে কুপি ও হারিকেনের কদর হারিয়ে যাওয়ায় বর্তমান সময়ে ছেলে মেয়েদের কাছে যা অপরিচিত দর্শন।এক সময় এই হারিকেনের মিটিমিটি বাতি ছিল ঘরের অন্যতম অংশ বিশেষ।রাতে হারিকেনের অনেক চাহিদা বা প্রচলন ছিল।সন্ধ্যা থেকে নারী পুরুষ তাদের গ্রামে,মহল্লায়,দোকান,হাট-বাজার,শিক্ষার্থীরা ঐতিহ্যবাহী হেরিকেনের মিটিমিটি আলো ব্যবহার করতেন।তৎকালীন সময়ে মানুষের অনেক উপকারে আসতো হারিকেন।কেরোসিন তৈল দিয়ে হারিকেন বা কুপি বাতি জ্বালাতে হতো।যত সময় তৈল থাকবে মিটিমিটি করে বাতি জ্বলতে দেখা যেত।অল্প খরচে হারিকেন জ্বালিয়ে গ্রামের মানুষেরা তাদের প্রয়োজনীয় কাজকর্ম পরিচালনা করতেন।
বর্তমানে বৈদ্যুতিক বাতির কারণে একসময়ের ঐতিহ্যবাহী হারিকেনের মিটিমিটি আলো হারিয়ে গেছে চিরচেনা গ্রাম বাংলা থেকে।উপজেলার হাট-বাজার গুলোতে হেরিকেন বা কুপি মেরামতের জন্য মিস্ত্রি পাওয়া যেত।বর্তমান সময়ে হারিকেন এবং মেরামতকারী উপস্থিতি আর চোখে পড়ে না।এ বিষয়ে সরকারি বীর মুক্তিযোদ্ধা আছাদুজ্জামান কলেজের প্রভাষক(রসায়ন) মোঃ ইলিয়াস হোসেন বলেন,,
হারিকেন বিংশ শতকের আবাল বৃদ্ধ বণিতা সবাই এই বস্তুটির সাথে পরিচিত।তাদের জীবনের সাথে যে আনুসঙ্গ গুলো সবচেয়ে বেশি ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিল তার মধ্যে একটি হল হারিকেন।আমাদের যাদের বয়স চল্লিশের বেশি তাদের প্রত্যেকের জীবনের সকল সুখ স্মৃতির সাথে মিশে আছে এই বস্তুটি।রাতের বেলা গ্রামীণ পরিবেশের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় বস্তু ছিল হারিকেন।হারিকেন বন্ধ হয়ে থাকা মানে একটা পরিবারের সব অন্ধকার হয়ে থাকতো।রাতে ঘরে সাপ অথবা চোর আসলে কিংবা কারো অন্য কোন বিপদ আপদ হলে বুঝা যেত বস্তুটি কত প্রয়োজনীয়।ঐ সময়ে একটি জনপ্রিয় নির্বাচনী প্রতীক ছিল হারিকেন।হারিকেনের গুরুত্ব বিবেচনা করেই নির্বাচনী সংস্থা এমন পদক্ষেপ নিয়েছিল।রাতের বেলা নানি,দাদি ও অন্যান্য বয়জষ্ঠদের গল্পের আসর জমে উঠতো হারিকেনের আলোয়।আমাদের প্রাচীন সকল গল্প ও উপন্যাসেও এর প্রমাণ পাওয়া যায়।বর্তমানের ছেলেমেয়েদের কাছে এটি অপরিচিত একটি বস্তু,তাই বলে আমাদের সভ্যতার ইতিহাসে আমরা এর অবদানকে অস্বীকার করতে পারি না।