মোঃ মনিরুল ইসলাম ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার ইসলামপুর এলাকায় দুধকুমার নদীর ডানতীর বরাবর ৫০০ মিটার এবং উজানের এন্ড টারমিনেশন সহ নদীতীর সংরক্ষণ কাজে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা ছাত্র দলের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান মিন্টু, সদস্য জাহাঙ্গীর আলম এর নেতৃত্বে সঙ্গবদ্ধ একটি চক্রের উপর ।
ঠিকাদারের দায়িত্বরত ব্যাক্তি সূত্রে জানা যায়, দুধকুমার নদের ইসলামপুর এলাকায় ডান তীরে নদীর তীর সংরক্ষণ কাজ করার জন্য এসএ-এসআই এন্ড উন্নয়ন ইন্টারন্যাশনাল জেভি কোম্পানির মাধ্যমে মালামাল প্রস্তুত করতেছিল দায়িত্বরত ব্যক্তিরা। ১৬ সেপ্টেম্বর (সোমবার) বিকেলে উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের স্বাধীন বাজার এলাকায় পাথরবোঝাই তিনটি গাড়ি আটকে দেয় ভূরুঙ্গামারী উপজেলা ছাত্র দলের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান মিন্টু ও আহ্বায়ক সদস্য ( ইসলামপুরে স্থানীয়) জাহাঙ্গীর আলম সহ কয়েকজন যুবক।
ঠিকাদার কোম্পানির দায়িত্বরত মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, ইসলামপুরে কাজটি দুধকুমার নদের ইসলামপুর এলাকায় ডান তীরে নদীর তীর সংরক্ষণ কাজ করার জন্য আমরা প্রায় এক মাস থেকে মালামাল সংরক্ষণ করতেছিলাম।স্থানীয়ভাবে ছাত্রদলের কয়েকজন ব্যক্তি আমার কাজকে বিভিন্নভাবে বাধাগ্রস্ত করে। তাদের দাবি আমার কাজগুলো তারা স্থানীয়ভাবে করবে যদিও কাজ কে করবে তার দায়িত্ব ঠিকাদার কোম্পানির উপর বর্তায়। সরকারি কাজ এভাবে বাধাগ্রস্ত হলে আমরা কাজ করতে সক্ষম হবো না। এক্ষেত্রে স্থানীয়ভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাবে, নদী ভাঙ্গন রোধ করা সম্ভব হবে না।
ঠিকাদার কোম্পানির ইসলামপুর পয়েন্টের দায়িত্বরত ব্যাক্তি স্বপন আকন্দ বলেন, আমরা কাজ শুরু করার পর থেকেই জাহাঙ্গীর, মিজানুর রহমান মিন্টু আমার কাজকে বাঁধা দিয়ে আসছে। ১৬ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩ টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পাথর বোঝাই তিনটি গাড়ি আটকে রেখে আমাদের কাজকে বাঁধা গ্রস্থ করে।
এ বিষয়ে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা ছাত্র দলের আহ্বায়ক সদস্য জাহাঙ্গীর আলম বিষয় টি অস্বীকার করে বলেন, আমার বাড়ির সামনে কাজ, এলাকার বাসীরা বলছে আমরা এখানে লেবার আমরা কাজ করব, তারা একপর্যায়ে কন্টাকটারের সাথে কথা বলে গাড়ি আটক দিয়েছিল । পরে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলছি, আটক দেওয়ার কি দরকার। আমরা ছিলাম জিনিসটা সমাধানের জন্য যাতে গ্যাঞ্জামটা না হয়। আমাদের এলাকার কাজ, কাজটা যেন স্বচ্ছ হয় এটাই হলো আমাদের কথা।
এ বিষয়ে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা ছাত্র দলের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান মিন্টুর সাথে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বিষয় টি প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে জানায়, আমরা কাজে বাঁধা দেইনি। আমরা প্রথমে ওইখানে কিছু কাজ করতে চেয়েছিলাম। এ বিষয়ে ঠিকাদারের সাথে আমাদের একটা বৈঠক হয়েছিল। কিন্তু ঠিকাদারের কথা হল আমরা কাউকে কোন কাজ দিব না। আপনারা যদি চান তাহলে পুরা কাজটা আপনারা ডিট করে দিতে পারেন। সেক্ষেত্রে আমাদের যেটা ইনভেস্ট করা আছে সেটা আপনারা ফেরত দেন। তখন আমরা বলছি যে এত বড় কাজ এটা আমাদের পক্ষে করা সম্ভব না। আপনারা আপনাদের কাজ করেন। স্থানীয়রা গাড়ি আটক করছে শুনে আমরা ঘটনাস্থলে আমি, সদস্য সচিব সহ আরো কয়েকজন গিয়েছিলাম বিষয়টা সমাধা করার জন্য।
পরে ভূরুঙ্গামারী বাস স্ট্যান্ডে ঠিকাদার কোম্পানির দ্বায়িত্বরত স্বপন এর সাথে আমাদের কথা হয়েছে যে, স্থানীয় লোকজনদের যে দাবি সেটা বিবেচনা করার জন্য উনি রাত্রে ঠিকাদারের সাথে কথা বলবে এবং আগামী বুধবার এটার ফলাফল স্থানীয় লোকজনদের জানাবে।
এ বিষয়ে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা বিএনপি আহ্বায়ক কাজি গোলাম মোস্তফা বলেন, দলের স্পষ্ট যেটা নির্দেশনা সারা ভূরুঙ্গামারীতে আমার ওই একই নির্দেশনা দেওয়া আছে কোথাও কেউ গেলে আমাকে আগে ফোন দিতে। সেটা আমি দেখব কোথাও কোনো ধান্দাবাজি- চান্দাবাজির প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। ওরা আমাকে বলছিল আমরা কাজটা করতে চাইছি। বলছি সেটা তোমরা যদি ঠিকাদার কোম্পানির সাথে কথা বলে নিতে পারো নাও। আমাদের দিতে হবে দিতেই হবে এরকম কোন কিছু বলা যাবে না। গতকাল কি হইছে সেটা আমাকে ডিটেলস শুনতে হবে। মিন্টু আমাকে কিছুদিন আগে বলছিল সাপ্লাইয়ের কিছু অংশ তারা কাজ করবে। আমি বলছি সেটা আলাপ করতে পারো তারা তো বিভিন্নজনকে দিচ্ছে সেটা যদি তোমরা একই রেটে দিতে পারো তাহলে আমার মনে হয় না আপত্তি করবে। কিন্তু কোন চাপ প্রয়োগ করা যাবে না।
গাড়ি আটকদের বিষয়ে আমি খোঁজ নিচ্ছি ওইখানে যদি ছাত্র দলই যেয়ে থাকে সেটা আমি দেখব, কেন তারা গেল। ছাত্রদলের লোকজনই যে গাড়ি আটক করছে এ বিষয়ে আমি এখনো নিশ্চিত না নিশ্চিত হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এ বিষয়ে চরভুরুঙ্গামারী ইউনিয়নের ইসলামপুর ১ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য কামাল উদ্দিন বলেন, ঘটনাস্থলে আমি ছিলাম না ,পরে আমি জানতে পেরেছি কয়েকজন যুবক স্বাধীন বাজারে পাথর বোঝাই গাড়ি আটক করছিল সেটা সন্ধ্যার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।