মানুষের মৃত্যুর পর চিরস্থায়ী ঠিকানা কবরস্থানের সৌন্দর্য বিকাশে জয়পুরহাট পৌর কেন্দ্রীয় কবরস্থানে ব্যাক্তিগত উদ্যোগে নিজ অর্থায়নে সুগন্ধিযুক্ত বেলিফুল ও জবাফুলের শতাধিক বৃক্ষ রোপণ করে সর্ব মহলে প্রশংসিত হয়েছেন বিশিষ্ট সমাজসেবক তোফায়েল আহমেদ জুয়েল।
বৃহস্পতিবার বাদ যোহর থেকে আসর নামাজের পূর্ব সময় পর্যন্ত জেলা শহরের বিশ্বাস পাড়া এলাকায় পৌর কেন্দ্রীয় কবরস্থানের পুরো জায়গায় এসব বৃক্ষ রোপনে তোফায়েল আহমেদ জুয়েলকে সহযোগিতা করেন, পৌর কেন্দ্রীয় গোরস্থান মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা মুফতী মইনুল ইসলাম, সাংবাদিক মোঃ সেলিম রেজা, সমাজ সেবক হাজী শরিফুল, দেলোয়ার, রাসেল বিশ্বাস, মোর্শেদ, আবু বক্করসহ আরও অনেকে।

ব্যাতিক্রমধর্মী এই উদ্যোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশিষ্ট সমাজসেবক তোফায়েল আহমেদ জুয়েল বলেন, ইসলাম ধর্ম বিশ্বাসী হিসেবে মৃত্যু আমাদের কাছে একটি বড় অধ্যায়। কারণ আমরা বিশ্বাস করি প্রত্যেক মানুষের জীবনের তিনটি পর্যায় যথাক্রমে দুনিয়া, কবর ও আখেরাত। তাই মৃত্যু পরবর্তী সময় অর্থাৎ কবরের সময়কালও আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মৃত্যুকে পূর্ণ মর্যাদা সহকারে পবিত্র অবস্থায়, ধর্মীয় রীতিনীতি প্রতিপালন করে সমাহিত করা মৃতের প্রতি তাঁর পরিজনদের দায়িত্বও বটে। এ জন্য প্রিয়জনকে সমাহিত করার স্থান বা কবরস্থান প্রতিটি মুসলমানের জন্য একটি অন্যরকম অনুভূতির স্থান হিসেবে পরিচিত। ইহজগতে প্রতিটি মানুষের ঠিকানা এক বা একাধিক থাকতে পারে। কারও জীর্ণ কুটির, কারোবা রাজকীয় অট্টালিকা। কিন্তু মৃত্যুর পর সব মানুষকেই একই ঠিকানায় যেতে হয়। সাড়ে তিন হাত জমির ওপর গড়ে ওঠে প্রাণহীন দেহের বসতবাড়ি। ক্ষমতাবান-বিত্তশালী থেকে শুরু করে শ্রমজীবী মানুষেরও শেষ আশ্রয় হয় কবরস্থান নামের এই ঠিকানায়। তাই কোনো কিছু চাওয়া বা পাওয়ার আশা থেকে নয়, মানসিক প্রশান্তি পেতেই আমি ব্যক্তিগত অর্থায়নে কবরস্থানের সৌন্দর্য বিকাশের জন্য ফুলগাছের চারা রোপণ করেছি।
এদিকে কবরস্থানে ফুল গাছ লাগানো কি জায়েজ কিনা? এর উত্তরে মাওঃ মোঃ ইমরান হোসেন (ইসলামি বক্তা) বলেন, প্রত্যেককেই মৃত্যুর স্বাদ ভোগ করতে হবে (সুরা আল ইমরান ১৮৫)। পবিত্র কোরআনের এই অমোঘ বাণী আস্তিক-নাস্তিক বা যেকোনো ধর্ম বিশ্বাসী অর্থাৎ কেউই অস্বীকার করতে পারেন না। মূলত জন্মের পর একমাত্র অবধারিত সত্য হচ্ছে মৃত্যু। আর কবরস্থানে ফুল গাছ লাগানো জায়েজ। কারণ সৌন্দর্য বিকাশের জন্য কবরের আশপাশে ফুলগাছ লাগানো যেতেই পারে। তবে ফুল গাছ লাগানোর উদ্দেশ্য যদি মৃত ব্যক্তির প্রতি সম্মান দেখানো হয়, তাহলে এটা নিষিদ্ধ হবে।
সমাজ সেবার পাশাপাশি তোফায়েল আহমেদ জুয়েল জয়পুরহাট সাংবাদিক এসোসিয়েশনের সভাপতি, জেলা ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, জয়পুরহাট অফিসার্স ফাউন্ডেশনের সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় ফারিয়া স্থায়ী পরিষদের সন্মানিত সদস্য, রাজশাহী বিভাগীয় ও জেলা ফারিয়ার সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়াও সাবেক ছাত্রদল ও যুবদল নেতা হিসেবে তাঁর বেশ সুনাম রয়েছে।
তার এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে জেলার সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ।