অমল পালিত,যশোর-প্রতিনিধি:
যশোরে আয়েশা নামে দেড় বছরের এক শিশু কন্যাকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার সৎ মায়ের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় নিহত শিশুর বাবা পিন্টু ও সৎ মা পারভীনকে পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেওয়া হয়েছে।
শনিবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে কিছুসময় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় আয়েশা। যশোর কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক পলাশ বিশ্বাস এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। স্থানীয়রা জানান, আয়েশার বাবা পিন্টু একজন রং মিস্ত্রি। কাজের জন্য প্রতিদিন সকালে বের হয়ে যান পিন্টু। এই সুযোগে গত চার দিন ধরে শিশুটিকে মারধরসহ বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন করে আসছে তার সৎ মা পারভীন খাতুন। শনিবার আয়েশাকে মারধর করে তার সৎ মা পারভীন। এরপর আঘাতের কারনে জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে আয়েশা। এরপরে শিশুটিকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা শুরুর কিছুসময় পর চিকিৎসক আয়েশাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে আয়েশার সৎ মা পারভীন বলেন, আয়েশা ও তার একটা ভাই আছে। তাদের মা দেড় বছর আগে অন্যের সঙ্গে পরকীয়া করে ছেলে-মেয়েকে রেখে চলে গেছে। এদিকে পারভীনের প্রথম স্বামীর সঙ্গে সংসারের সময় একটি মেয়ের জন্ম হয়। বর্তমানে মেয়েটির বয়স ৯ বছর। কিন্তু তার প্রথম স্বামী অন্য একটা মেয়ের সঙ্গে পরকীয়া করে বিয়ে করায় পারভীনের সঙ্গে তার তালাক হয়ে যায়। পারভীন এক বছর আগে পিন্টুর সঙ্গে দ্বিতীয় বিয়ে করে সংসার করে আসছিলেন। দুইটি সন্তানকে তারা খুবই ভালোবাসতেন। শনিবার অতিরিক্ত শীতে হঠাৎ মাটিতে পড়ে গিয়ে আয়েশা জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। তাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসারত অবস্তায় কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আয়শার পিতা পিন্টু মিয়া জানিয়েছেন, তার বাড়ি চাঁদপুর জেলায়। কাজের জন্য কয়েক বছর আগে যশোরে আসেন। আয়েশার মা অন্য পুরুষের সঙ্গে পরকীয়া করে চলে যাওয়ায় পারভীনকে বিয়ে করেছেন তিনি। শনিবার সকালে কাজের উদ্দেশে তিনি বাসা থেকে বের হন। দুপুর ১২টার দিকে খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে আয়েশাকে মৃত দেখতে পান। কিন্তু কি কারণে কি হয়েছে এবিষয়ে তিনি এখনও কিছু জানেন না।
এ ঘটনায় যশোর সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. শুভাশিস রায় জানান, শনিবার বেলা ১টার দিকে আয়েশা খাতুনকে তার পরিবারের সদস্যরা জখম অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তার মাথা, মুখমন্ডল ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল। তাকে দ্রুত ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। কিন্তু সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুরেই আয়েশার মৃত্যু হয়।
যশোর কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক এসআই পলাশ বিশ্বাস জানিয়েছেন, শিশুটিকে মারধরের আঘাতে হত্যার কথা শোনা যাচ্ছে।শিশুটির মা ও বাবাকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। তাদেরকে জেরা করে বিষয়টি তদন্ত করে প্রকৃত সত্য ঘটনা উদঘাটন করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।