শাহাদাৎ হোসেন সরকার :
আশুলিয়ায় গাড়ি বিক্রির কথা বলে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে একটি প্রতারকচক্রের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী বাদি হয়ে আশুলিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
বুধবার (২৪ জানুয়ারি) বিকেলে অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ভজন চন্দ্র রায়।
প্রতারকচক্রের সদস্যরা হলেন, ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানার উত্তর গাজিরচট এলাকার আবু জাফরের ছেলে মো. আবু হানিফ মনা (৩৮), এবং রাজধানীর রমনা থানার সেগুনবাগিচা ওয়েস্টার্ন টাওয়ার এলাকার মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে মো. রাশেদ সারোয়ার (৪৮)।
তারা উভয়ে যোগসাজশের মাধ্যমে গাড়ি বিক্রির কথা বলে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মো. বেলাল হোসেন বাবলু (৩৫) আশুলিয়ার বাইপাইল হাজেরা সুপার মার্কেটের ডেনসো কার-এসি এন্ড মটর পার্টস গ্যারেজের স্বত্বাধিকারী।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর গ্যারাজে বিভিন্ন সময় প্রতারকচক্রের সদস্য আবু হানিফ মনা নিজ মালিকানাধীন গাড়ি মেরামত করতে আসতো।
সেই সুবাদে তাদের মধ্যে একটি সম্পর্ক গড়ে উঠে, পরবর্তীতে ২০২১ সালে মনা তার খালাতো ভাই রাশেদ সারোয়ারের মালিকানাধীন একটি হায়েস গাড়ী (নাম্বার বিহীন নতুন অনটেস্ট, যার ইঞ্জিন নং- 1TR1719362, চেসিস নং- TRS2000236136) সে মধ্যস্থতা করে ভুক্তভোগীর নিকট বিক্রয় করবে বলে জানায়।
তার কথামতো ভুক্তভোগী ২০২১ সালের ২৯ আগস্ট ২৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা মূল্য পরিশোধ করে গাড়িটি বুঝে নেন এবং ১ সপ্তাহের মধ্যে গাড়ীটি ভুক্তভোগীর নামে রেজিস্ট্রেশন করে দেয়ার শর্তে তিনশ’ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে চুক্তিবদ্ধ হন।
পরবর্তীতে প্রতারক মনা ও রাশেদ শর্ত মোতাবেক গাড়িটি রেজিস্ট্রেশন করে দিতে না পারায় ভুক্তভোগী তাদেরকে তাগিদ দেয়।
কিন্তু মনা ও রাশেদ ভুক্তভোগীকে গাড়ী রেজিস্ট্রেশন করে না দিয়ে একই গাড়ী জনৈকা ফারজানা আফরোজের নিকট বিক্রি করে তার নামে রেজিস্ট্রেশন করে দেয়।
বিষয়টি ভুক্তভোগী জানতে পেরে তার প্রদেয় টাকা ফেরত চাইলে মনা নানা তালবাহানা করতে থাকে এবং তার মালিকানাধীন অন্য একটি পুরাতন হায়েস গাড়ী যার রেজিষ্ট্রেশন নং ঢাকা মেট্রো চ-১৬-২৮৩৬, ইঞ্জিন নং- 1TR1560472, চেসিস নং-TRS2005022757) ভুক্তভোগীকে দিবে ও প্রদেয় টাকার মধ্যে ৭ লাখ টাকা ফেরত দিবে বলে স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতিতে অঙ্গীকার করে তাদের দেয়া পূর্বের গাড়িটি ফেরত নিয়ে যায়।
পরবর্তীতে প্রতারক মনা ও রাশেদ ভুক্তভোগীকে অঙ্গীকারকৃত গাড়ি ও প্রদেয় টাকা বুঝিয়ে না দিয়ে উল্টো ভুক্তভোগীর জান-মালের ক্ষতিসাধনের উদ্দ্যেশ্যে নানা ধরনের হুমকি প্রদান করে।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মো. বেলাল হোসেন বাবলু বলেন, প্রতারক মনা ও তার খালাতো ভাই রাশেদ হায়েস গাড়ি বিক্রির কথা বলে আমার কাছ থেকে ২৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা নিয়েছে।
তারা আমাকে ছাড়াও বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে গাড়ি বিক্রির কথা বলে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানতে পেরেছি। এ ঘটনায় আমি ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতারকচক্রের সদস্য আবু হানিফ মনা মুঠোফোনে জানান, ব্যবসায়ী বাবলু গাড়িটি কেনার জন্য আমাকে রাশেদ সারোয়ারের নিকট নিয়ে যায়।
বাবলু সরাসরি রাশেদ সারোয়ারের একাউন্টে টাকা লেনদেন করেছে। এ ঘটনায় আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই এবং রাশেদ সম্পর্কের দিক থেকেও আমার কিছু হয় না।
অপরদিকে রাশেদ সারোয়ারের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ভজন চন্দ্র রায় বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।