মো: লিটন উজ্জামান বিশেষ প্রতিনিধি :
৩০-০১-২৪ তারিখ মঙ্গলবার সকাল ১১ টার সময কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্প (জিকে) ক্যানেলের জমিতে অবৈধভাবে মাটি কাটার অভিযোগে মজিবর রহমান (৫৫)নামের একজনকে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার আকাশ কুমার কুন্ড এই অভিযানের সময় উপস্থিত ছিলেন সাজিত হক, উপ- বিভাগীয় প্রকৌশলী ভেড়ামারা পওর উপ বিভাগ বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোড ভেড়ামারা, অসিম কুমার,উপ- সহকারী প্রকৌশলী ভেড়ামারা পওর শাখা বাপাউবো ভেড়ামারা, ভেড়ামারা থানার এস আই বিশ্বজিৎ কুমার রায়, সহ সঙ্গীয় ফোর্স।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সরজমিনে গিয়ে মজিবর নামের এক জনকে আটক করে।এবং সরকারি গঙ্গা কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্প( জিকে) ক্যানালের জমিতে অবৈধভাবে মাটি কাটার দায়ে ৩ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক ও ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আকাশ কুমার কুন্ডু।
ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আকাশ কুমার কুন্ডু সাংবাদিকদের বলেন,
এ ধরনের অভিযান আমরা অব্যাহত রেখেছি। ভেড়ামারা উপজেলায় যেখানেই অবৈধভাবে মাটি কাটা দেখবেন আমাদেরকে খবর দিলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
উল্লেখ, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্প (জিকে) ক্যানেলে জিকে ৩ নম্বর ব্রিজের সন্নিকটে মিরপুরগামী রাস্তার পাশে সরকারি ক্যানেলের মধ্যস্থলের মাটি কেটে উহা উত্তোলন করে পাশেই সরকারি জায়গা -জমিতে ভরাট করে নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণের মহোৎসব চলছে। জনৈক অসাধু ব্যবসায়ী ফারুক সহ আশেপাশের আরো অনেক লোভী ব্যক্তিরা পানি উন্নয়নের বোর্ডের কর্মকর্তাদের উদাসীনতার সুযোগ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে এই অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। ব্যক্তিগতভাবে সরকারি সম্পদ বিপুল পরিমাণ মাটি কুক্ষিগত করে সরকারি জায়গা ভরাট করে কোটি কোটি টাকা মূল্যমানের ভূসম্পত্তি আত্মসাতে উঠে পড়ে নেমেছে এই অসাধু মহলটি। রাজনৈতিক পরিচয় এর সূত্র ধরে ও নিজেদেরকে বিভিন্ন বড় বড় রাজনৈতিক নেতাদের নিকটাত্মীয় বলে পরিচয় দিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে সবার চোখের সামনে সরকারি কর্তৃপক্ষকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বেআইনিভাবে কাজটি করে যাচ্ছিল তারা। সরেজমিন পরিদর্শন করে এই প্রতিবেদক গত সোমবার সকালে শ্রমিক নিয়োগ করে উক্ত স্থানে মাটি কাটাতে ও ভরাট করতে দেখেন। মাটি কাটতে ব্যস্ত নিয়োগকৃত দিন মজুরেরা প্রতিবেদককে জানান, ফারুক নামের উক্ত এলাকারই একজন ব্যবসায়ী তাদেরকে এখানে এই কাজে নিয়োগ করেছে এবং নিয়মিত হাজিরা প্রদান করছে। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ফারুকের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি মাটি কাটা ও ভরাটের দায় স্বীকার করে বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন এসে দেখে গেছে তারা কিছু বলেনি। কাজটা বেআইনি হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন যে, হ্যাঁ বেআইনি হচ্ছে। আমরা সবাইকে ম্যানেজ করে কাজ করছি।
এ ব্যাপারে গঙ্গা- কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পের পাম্প হাউজের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে তার দায়িত্ব এড়িয়ে যান। তিনি বলেন, এ বিষয়ে কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর নিকটে আপনারা যোগাযোগ করুন। উক্ত কর্মকর্তার পরামর্শ মোতাবেক পানি উন্নয়ন বোর্ড, কুষ্টিয়া এর নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে মোবাইল ফোনে বেশ কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হয়ে প্রতিবেদক কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক এহতেশাম রেজার সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেন। জেলা প্রশাসককে বিষয়টি সবিস্তারে অবগত করানো হলে তিনি বেআইনীভাবে মাটি কর্তন করে সরকারি জায়গা দখল করে ভরাট করার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন। সেই সাথে গঙ্গা কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পের ক্যানালের মাটিকাটা ও ক্যানেলের উপরিভাগের জায়গা জমি অপদখলের বিষয়গুলো খুবই গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে মর্মে জানান জেলা প্রশাসক।