শাহীদুল ইসলাম কালু, শেরপুর জেলা প্রতিনিধি:
শেরপুরে নিজ চাচার কাছে ‘ধর্ষণের শিকার’ হয়ে বিচার না পেয়ে চিরকুট লিখে ফারিয়া ইয়াসমিন ঝিনুক (১৫) নামে এক দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ-মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৬ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে সদর উপজেলার কামারেরচর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে প্রায় দুই ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনে অংশ নেন স্থানীয় শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকরা। ওইসময় তারা ঝিনুকের মৃত্যুর জন্য দায়ীদের দ্রুত গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান।
স্থানীয় ও মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মেধাবী শিক্ষার্থী ফারিয়া ইয়াসমিন ঝিনুকের বাবার মৃত্যুর পর মা কমলা বেগম দ্বিতীয় বিয়ে করে অন্যত্র চলে যান। এরপর থেকে ঝিনুক ও তার ছোট ভাই সদর উপজেলার কামারেরচর ইউনিয়নের সাহাব্দীরচর দশআনী এলাকায় দাদীর বাড়িতে থেকে স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে পড়াশোনা করতো। এ সুযোগে তার আপন চাচা ওই স্কুলের শিক্ষক রাকিবুল হাসান মিন্টু তাকে জোরপূর্বক নিয়মিত ধর্ষণ করে আসছিল। বিষয়টি ঝিনুক তার দাদা-দাদী ও তার ফুপা স্কুলের প্রধান শিক্ষক শেখ ফরিদের কাছে জানিয়েও কোন সুবিচার পায়নি। পরে ১২ নভেম্বর সকালে তার ফুপা স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে গিয়ে বিচার না পাওয়ার অভিযোগ তুলে একটি চিরকুট লিখে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় ঝিনুক। চিরকুটে লেখা ছিল ‘আমি বিচার পাইলাম না বলিয়া, আত্মহত্যা মহাপাপ জানিয়াও আমি আত্মহত্যা করিলাম’।
ঝিনুকের মা কমলা বেগম বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় কারো কাছে সুবিচার না পেয়ে তার ফুপা প্রধান শিক্ষক শেখ ফরিদের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সেখানেও বিচার না পেয়ে, তার বাড়িতেই আত্মহত্যা করে ঝিনুক। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার প্রার্থনা করছি। এদিকে অভিযুক্তরা সকলেই পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদল বলেন, ঝিনুকের মা আদালতে একটা অভিযোগ দিয়েছেন। ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের পর আমরা একটি অপমৃত্যু মামলা নিয়েছি। আমরা ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় আছি। রিপোর্ট পেলেই সে অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।