মো: লিটন উজ্জামান বিশেষ প্রতিনিধি :-

শুধু তাকিয়ে থাকার নাম দেখা নয়,দেখা মানে চোখের সাথে মনের সংযোগ।প্রতি দিনের ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা,কোন অসংগতি, মানুষের দুঃখ – দুদর্শা,সমাজে বসবাসরত মানুষের জন্য কল্যাণকর কাজগুলো করা বা করবার জন্য মানুষের লুকায়িত স্বপ্নগুলো বাস্তবে রুপদানের চেষ্ঠা করা, আধুনিক যুগের ড্রোন ক্যামেরার মাধ্যমে দেখা অথবা প্রকৃতির তৈরী ঈগলের দৃষ্টিতে দেখাও দেখা। সব্রাগে মানুষের জন্য কাজ করবার জন্য মনোবাসনা ও আপাতঃ দৃষ্টিতে দেখা বলে দৃশ্যত মনে হয়।

কুষ্টিয়া মেডিকেল এসোসিয়েশন ( স্বাধীনতার স্বপক্ষের সংগঠন) ও নাগরিক কমিটি কুষ্টিয়ার সভাপতি, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ, বিশিষ্ট সার্জন ডাঃ এসএম মোসতানজিদ লোটাসের নিমন্ত্রণে গতকাল রবিবার বিকালে ভেড়ামারা প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার গোলাপনগর মহারাজপুরে রহমান – লোটাস হেরিটেজ হোম পরিদর্শন করেন।দীর্ঘ ৪ ঘন্টা অবস্হানকালে ডাঃ লোটাস সাংবাদিকদের সাথে তার দুরন্ত শৈশব,কৈশরের বিভিন্ন স্মৃতি, পড়ালেখা,সমাজনীতি, রাজনীতি,সামাজিকতা,সম সাময়িক বিভিন্ন বিষয়ের উপর আন্তরিকতার সাথে একান্ত আলাপ – আলোচনা করেন এবং তার বাগান বাড়িটি ঘুরে ঘুরে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দকে পরিদর্শন করান।

প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য ও শোভামন্ডিত লোকালয় – কোলাহলমুক্ত শহরের কালোধোয়া বর্জিত, শতভাগ অক্সিজেন হাউজ রহমান – লোটাস হেরিটেজ হোম। ডাঃ লোটাসের পিতামহ, পিতামাতা’ র স্মৃতিবিজড়িত পৌরানিক বাগান বাড়িটি আজ কিছুটা আধুনিকতার ছোঁয়ায় পুরানোকে ধরে রাখার অদম্য চেষ্ঠা,যা চিত্ত বিনোদনের ক্ষুধা নিবারক হিসাবে ধরে নেয়া যায়।

অত্যান্ত দুরদর্শী চিন্তা, চেতনা আর মননশীলতায় বাগান বাড়িটির শ্রীবৃদ্ধি করার চেষ্ঠা করা হয়েছে।বাড়িটিতে প্রবেশ এবং বাহিরের জন্য দুটো ফটক রয়েছে। বাড়ির প্রবেশ মুখে তীক্ষ দৃষ্টির ঈগলের প্রতিকৃতি, ডাঃ লোটাসের বাবার মার্বেল খচিত প্রতিকৃতি,দর্শনার্থীদের বসার রুমে ঢুকতে তার মহীয়সী মায়ের প্রতিকৃতি,বঙ্গবন্ধু, রবীন্দ্রনাথ, কাজী নজরুল এর ছবি, রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মুর্তি,২য় তলার সিঁড়িতে উঠতে তার পুর্ব পুরুষদের পরিচিতি ফলক,২য় তলায় তার দাদীর ব্যবহুত খাট ড্রেসিং টেবিল সম্বলিত কামরা , বেলকুনিতে দাঁড়ানো দাবা পয়েন্ট,২য় তলার বেডরুমে ঢুকতে পদ্মার পালতোলা নৌকার আঁকা বিরল ছবি, বেডরুমে/ ডাইনিংয়ে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনের আঁকা আবহ বাংলার জমি আবাদের দুর্লভ ছবি।পাশে রয়েছে আরেকটি বেডরুম সাথে ওয়েষ্টার্ণ ধাচের বাথপয়েন্ট,টয়লেট।

ডাঃ লোটাসের দাদার তৈরী পুরানো চারচালা ঘরটির মুল রেখে আধুনিক প্যাটানে শিশু ও বয়সীদের জন্য পুর্ণাঙ্গ পাঠাগারের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।হাঁটার জন্য রয়েছে কার্পেট গ্রাস,সীমানা প্রাচীরে রয়েছে ওয়াল কার্পেট উদ্ভিদ,রয়েছে সিমেন্টের তৈরী হিল ঝর্ণা,সরু লেক, যাতে রয়েছে কালার ফিস,সিমেন্টের তৈরী হার্ট ঝর্ণা,সিমেন্টের তৈরী শাপলা ঝর্ণা,হরিণ, হাঁস সহ অন্যন্য প্রাণীর আর্টিফিসিয়াল অবয়ব,লেকের উপরে সিমেন্টের বাঁশের ক্রসিং পুল, সিমেন্টের তৈরী গাছের গুঁড়ি সম্বলিত পাটাতন উদ্ভিদ,পদ্ম ফুলের মিনি পুকুর, গ্রামের লাইব্রেরী মহিলা প্রতিকৃতির বই পড়া ম্যুরাল, স্বাধীনতার বীর সেনা,বাংলার স্বাধীন পতাকা খচিত দেয়ালী,বিংশ শতাব্দীর ইংরেজ আমলে নির্মিত খরশ্রোতা প্রমত্তা পদ্মানদীর উপর নির্মিত হার্ডিঞ্জ ব্রিজের ডেমী, যুদ্ধচলাকালে শক্রু পক্ষকে আঁটকাতে ইন্ডিয়া কতৃক ভেঙে দেয়া ব্রিজের তৎকালীন দৃশ্য ইতিহাস পড়ুয়া দর্শকদের অবশ্যই আকর্ষিত বস্তু।

রহমান- লোটাস হেরিটেজ হোমে আরো রয়েছে, অতিথী আপ্যায়নের খাবার তৈরীর কিচেন, পাইক বরকন্দাজদের জন্য আলাদা বাথপয়েন্ট, টয়লেট ও থাকার ব্যবস্হা,বিশ্রাম বেঞ্চ,পারিবারিক কবরস্হান, আম্রকানন,ড্রাগন বাগান, চায়না কমলা, থাই পেয়ারা সহ নানাবিধ ফলজ বাগান। রাতে বাড়িটির সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য বিভিন্ন রঙের বাহারী রঙিন বিজলী বাতি।যা ডাঃ লোটাসের বিভিন্ন সময়ের সৃষ্টিশীল চিন্তা – চেতনা ও কলাকুশলীদের দ্বারা নির্মিত সৃজনশীল সৃষ্টিযজ্ঞ।

ডাঃ এস এম মোসতানজিদ লোটাস গণমানুষের কল্যাণে নিবেদিত প্রাণ ব্যাক্তি হিসেবে কল্যাণধর্মী কাজের মাধ্যমে আলোকিত ভেড়ামারা সৃষ্টিতে সহায়ক হিসেবে সামনে এগিয়ে যাবেন, সে প্রত্যাশা ও শুভকামনা নিরন্তর।